`তারা তাদের অঙ্গীকার পূর্ণ করেছেন’
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
কাশ্মীর ভিত্তিক আল-কায়েদা সমর্থিত জিহাদি তানযিম আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ(AGH) তাদের অফিসিয়াল আল-হুর মিডিয়ায় একটি নতুন বার্তা প্রদান করেছেন। বার্তাটিতে তাঁরা কাশ্মীর অধ্যুষিত শোপিয়ান জেলায় তাঁদের ৪ মুজাহিদ সাথীর গৌরবময় শাহাদাতের সুসংবাদ জানিয়েছেন। বাংলাভাষী পাঠকদের সুবিধার্থে বার্তাটির বাংলা অনুবাদ তুলে ধরা হলো।
আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
কাশ্মীর ভিত্তিক আল-কায়েদা সমর্থিত জিহাদি তানযিম আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ(AGH) তাদের অফিসিয়াল আল-হুর মিডিয়ায় একটি নতুন বার্তা প্রদান করেছেন। বার্তাটিতে তাঁরা কাশ্মীর অধ্যুষিত শোপিয়ান জেলায় তাঁদের ৪ মুজাহিদ সাথীর গৌরবময় শাহাদাতের সুসংবাদ জানিয়েছেন। বাংলাভাষী পাঠকদের সুবিধার্থে বার্তাটির বাংলা অনুবাদ তুলে ধরা হলো।
——————————————
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّـهِ ۗ وَاللَّـهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ
মানুষের মাঝে এমন কিছু লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জীবন বাজি রাখে, আর আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান। (সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২০৭)
জিহাদি সফর পরিপূর্ণ ইমান ও আনুগত্য চায়, এই সফরে চলার পথে অনেক পেরেশানি ও পরীক্ষা এসে সামনে হাজির হয়, যার থেকে উত্তরণ একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলার সাহায্য ও অনুগ্রহেই সম্ভব হয়।
কাশ্মীরের ভূমি হতে সকল বাতিল ফেরকা ও গাইরুল্লাহর আইন-কানুনকে ধ্বংস করে এই জমিনে আল্লাহ তা’য়ালার বিধান বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয় সামনে রেখে যাত্রা শুরু করেছিলো আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ।
এই মহান লক্ষ্য অর্জনে উম্মাহর অতন্দ্র প্রহরী আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের মুজাহিদগণ আরো একবার নিজেদের রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন; তাঁরা মুসলিম উম্মাহকে এই স্বপ্ন দেখিয়েছেন যে বিপদসংকুল বন্ধুর পথটুকু পাড়ি দেয়ার পরেই অপেক্ষা করছে মাঞ্জিলের ঝলমলে আলো।
গত ২২ এপ্রিল ২০২০ উম্মাহর চার যুবক তাঁদের কৃত অঙ্গীকার চূড়ান্তরূপে সত্যায়ন করেছেন। তাঁদের এই শাহাদাহ এবং দৃঢ়প্রত্যয়ে সামনে ছুটে চলা আমাদের ভাবনাপটে আসহাবে বদরের ঘটনাকে আরো একবার অনুরণিত হতে প্রেষণা যোগায়।
সেদিন রাতে তাঁরা সশস্ত্র সাজে মশগুল ছিলেন মহান রবের ইবাদতে। গান-ফায়ারের আলোক ঝলকানিতে মেতে উঠেছিলেন জান্নাতের নেশায়। অবশেষে মুশরিক হিন্দু সৈন্যদের বিরুদ্ধে এক মোবারক যুদ্ধের পর শাহাদাত বরণ করেন তাঁরা। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রজিউন।
ওইদিন সন্ধ্যায় ভারতীয় মুশরিক সৈন্যরা আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের কয়েকজন মুজাহিদকে অবরুদ্ধ করে ফেলে। মুজাহিদিনরা মুশরিক সৈন্যদের বিরুদ্ধে তীব্র লড়াই শুরু করেন; মুক্ত হয়ে আসেন ওদের হাত থেকে। পরে মুজাহিদগণ দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ভারতীয় মালাউন মুশরিক সৈন্যদের উপর পাল্টা অভিযান চালান। রাতব্যাপী চলতে থাকে লড়াই।
ভোর নামার কিছুক্ষণ আগে ওসামা ভাই ও লোকমান ভাই হিন্দু মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াইরত অবস্থায় শাহাদাত বরণ করেন। তাঁদের শাহাদাতের পর আসেম ভাই ও কাসিম ভাই মুশরিক সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখেন। একসময় তাঁরাও পৌঁছে যান রবের সান্নিধ্যে।
শহিদ লোকমান ছিলেন শোপিয়ান অঞ্চলের বাসিন্দা। চাকুরি করতেন পুলিশ বাহিনীতে। সেখান থেকে রাইফেল নিয়ে যোগদান করেন এলইটিতে। শুরু হয় তার জিহাদি জীবনের যাত্রা। পরে সত্যের আওয়াজ তাঁর কানে পৌঁছুলে তিনি সেখান থেকে এসে যুক্ত হন আনসার গাজওয়াতুল হিন্দে। শাহাদাতের বাই’য়াত গ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘদিন আনসার গাজওয়াতুল হিন্দের শোপিয়ান জেলা-কমান্ডার হিসাবে দায়িত্বপালন করেছেন।
শহিদ ওসামা ভাই ২০১৮ সালের শুরুর দিকে একজন আনসার হিসেবে জিহাদের কাজ শুরু করেন। সম্পর্ক ছিলো এলইটির সাথে। পরে সত্যের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুজাহিদিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। মুজাহিদিনের সাথে যুক্ত হতে তাঁকে অপেক্ষা করতে হয় একটি দীর্ঘ সময়। পরবর্তীতে তিনি এবং তাঁর সাথী আবু উবায়দা রহ. শহিদ জাকির মুসার হাতে শাহাদাহর বাই’য়াত গ্রহণ করেন। তিনি পুলওয়ামা অঞ্চলের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বপালন করেন।
শহিদ আসেম ভাই পুলওয়ামা জেলার নিকলুরার বাসিন্দা। তিনি গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে আনসার গাজওয়াতুল হিন্দে যুক্ত হন। তিনি ছিলেন সত্যবাদী ও নিষ্ঠাবান যোদ্ধা। তাঁর জিহাদি সফর পুরো উম্মাহর জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শহিদ কাসেম ভাই দক্ষিণ কাশ্মীরের মেইনটাউন বারামুল্লাহ এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ২০১৯ সালের জুনের দিকে তিনি হিজবুল মুজাহিদিনে যোগ দেন। জিহাদের ময়দানে এসেও তিনি খুঁজতে থাকেন প্রকৃত হক দল। একদিন তিনি এবং তাঁর সাথী রফিক ওয়ানি রহ. হিজবুল মুজাহিদিনের একজন দায়িত্বশীলকে জিজ্ঞেস করেন, যদি কাশ্মীর মুসলিমদের দখলে চলে আসে, তবে আপনারা কী করবেন? উত্তরে তারা বলে, আমরা মানুষের অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করবো(অর্থাৎ সংবিধান প্রণয়ন করবো) এবং অস্ত্র ফেলে দিয়ে ঘরে ফিরে যাবো। তখন তাঁদের সামনে হিজবুল মুজাহিদিনের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য পরিস্কার হয়ে যায়। তাঁরা সেখান থেকে ফিরে আসেন। যোগ দেন হক জিহাদি জামাআত আনসার গাজওয়াতুল হিন্দে।
আনসার গাজওয়াতুল হিন্দ মুসলিম উম্মাহর এই মহান বীরদের শাহাদাহ উপলক্ষে তাঁদের পরিবার এবং প্রত্যেক আহলে-ইমানকে মোবারকবাদ জানাচ্ছে এবং তাঁদের ব্যাপারে এই কথার সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, তাঁরা ছিলেন নিষ্ঠাবান মুজাহিদ। তাঁদের শাহাদাতে আমরা দুঃখ-ভারাক্রান্ত নই; কেননা তাঁরা তো স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু তা’য়ালার সান্নিধ্য ও হেফাজতে চলে গেছেন। আল্লাহ তাঁদের এই আত্মত্যাগকে কবুল করুন।
তাঁদের এই শাহাদাহর মাঝে ওইসকল মানুষের জন্য শিক্ষা রয়েছে যারা জাতীয়তাবাদের মায়াজালে আবদ্ধ; যারা জাতিরাষ্ট্রের ইশারায় যুদ্ধ করে, আবার এর ইচ্ছায় যুদ্ধ পরিত্যাগ করে। বরং যুদ্ধ তো একমাত্র আল্লাহর জন্য।
———————————————
শাবান ১৪৪১ হিজরি / এপ্রিল ২০২০ ঈসায়ী
-----------------------------------------------------------
Comment